Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

জেটিপিডিসি উইং এর সাফল্য

জেটিপিডিসি উইং এর গবেষণার সাফল্যঃ

প্রচলিত পাটজাত দ্রব্য বলতে কেবল পাট দিয়ে জুট প্রসিসিং সিস্টেমে উৎপাদিত দ্রব্যকেই বোঝায়। জুট প্রসেসিং সিস্টেমে লং জুট বা পাটকে না কেটে সরাসরি প্রসেস করা হয়। ফলে লং জুট এককভাবে বা এর সংগে অন্য কোন আঁশ মেশালেও তা থেকে সরূ বা মিহি সুতা তৈরি করা সম্ভব হয় না। পাট থেকে শিল্পজাত দ্রব্যাদি তৈরির এ সীমাবদ্ধতার কারণে শতাব্দীর অধিককাল ধরে পাটজাত দ্রব্যাদির মধ্যেও যেমন বৈচিত্র্য আনয়ন করা সম্ভব হয়নি, তেমনি এর বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধিও সম্ভব হয়নি। তদুপরি শিল্প বিপ্লবের পর পলিপ্রোপাইলিন জাতীয় কৃত্রিম আঁশ বা তন্তুর আবিষ্কারের ফলে পাটজাত দ্রব্যাদির চাহিদা আশংকাজনকভাবে কমে যায় ।পাট শিল্পে চরম বিপর্যয়ও শুরূ হয়, ফলশ্রূতিতে বহু পাট শিল্প বন্ধ হয়ে যায়। কৃত্রিম তন্তু উদ্ভাবন ও উন্নয়নে  প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হলেও পাটের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য তেমন কোন বৃহৎ পরিকল্পনা কেহই গ্রহণ করেনি।

 

বিংশ শতাব্দীতেই পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি হয় এবং বিশ্ব জনমত কৃত্রিম আঁশের বিরূদ্ধে অবস্থান নেয়। পাট সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক আঁশের এই পুনরূজ্জীবনের সংগে সংগে তুলার উপর চাপ বেড়ে যায়, কেননা তুলাই একমাত্র টেক্সটাইল আঁশ হিসাবে গণ্য হতো। ফলে তুলার দাম হু হু করে বেড়ে যেতে থাকে। এ অবস্থায় বস্ত্র শিল্পগুলো পরিধেয় বস্ত্রসহ গুরম্নত্বপুর্ণ ফেব্রিক্স তৈরিতে তুলা প্রধান উপাদান হিসাবে গ্রহণ করলেও অন্যান্য গার্হস্থ ব্যবহারের জন্য বিকল্প প্রাকৃতিক আঁশের সন্ধান করতে থাকে। এই ক্রাত্মিকালে পাটকে টেক্সটাইল আঁশ হিসাবে গণ্য করার প্রচেষ্টা শুরূ হয়। লং জুট বা জুট প্রসেসিং সিস্টেমের পরিবর্তে কটন প্রসেসিং সিস্টেমে পাটকে ব্যবহারের জন্য গবেষণা শুরূ হয়। জেটিপিডিসি প্রকল্পের চিন্তা ভাবনার মূল ভিত্তি এখানেই। কটন প্রসেসিং সিস্টেমে পাটকে ব্যবহার করা জন্য লম্বা পাটকে ৩-৪ সেন্টিমিটার বা দেড়/দুই ইঞ্চি দীর্ঘ টুকরায় পরিণত করে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাটকে তুলার কাছাকাছি গুন সম্পন্ন করা হয়। এরপর বিভিন্ন ধাপে প্রক্রিয়াজাত পাটকে তুলার সংগে বিভিন্ন অনুপাতে সংমিশ্রিত করে যে সুতা তৈরী করা হয় তাকে কটন কাউন্ট হিসাবে পরিমাপ করা হয়। জেটিপিডিসি উইংয়ে এ পর্যন্ত কটন কাউন্টের ১০, ১২, ১৫, ১৬, ২০, ২২ কাউন্ট পর্যন্ত মিহি সুতা উদ্ভাবন ও উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। 

 

১) প্রযুক্তির নামঃ

০১) বিভিন্ন টেক্সটাইল অাঁশের ক্যামিকেল মোডিফিকেশনঃ

  • পাটকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় উন্নীত করে তুলার কাছাকাছি গুন সম্পূর্ণ করা।
  •  স্থানীয় ভেড়ার লোমকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কটন প্রসেসিং সিস্টেমের উপযোগী করা।

 

০২) পাট তুলার আনুপাতিক মিশ্রিনে বিভিন্ন ধরনের (কাউন্ট) সুতা তৈরী করা (রোটর ও রিং স্পিনিং এর মাধ্যমে)ঃ

  • 10S এর 20% Jute এর 80% cotton blended yarn
  • 10S এর 30% Jute এর 70% cotton blended yarn
  • 10S এর 40% Jute এর 60% cotton blended yarn
  • 10S এর 50% Jute এর 50% cotton blended yarn
  • 10S এর 60% Jute এর 40% cotton blended yarn
  • 10S এর 70% Jute এর 30% cotton blended yarn

 

  • 12S এর 20% Jute এর 80% cotton blended yarn
  • 12S এর 30% Jute এর 70% cotton blended yarn
  • 12S এর 40% Jute এর 60% cotton blended yarn
  • 12S এর 50% Jute এর 50% cotton blended yarn
  • 12S এর 60% Jute এর 40% cotton blended yarn
  • 12S এর 70% Jute এর 30% cotton blended yarn

 

০৩) পাট, তুলা ও স্থানীয় ভেড়ার লোম এর সংমিশ্রনে সুতা তৈরী করাঃ

  • 10S এর 40% Jute এর 40% cotton এবং 20% Wool blended yarn
  • 12S এর 40% Jute এর 30% cotton এবং 30% Wool blended yarn

 

০৪) পাট, তুলা এবং জুট সেল এর মাধ্যমে বিভিন্ন কাউন্টের সুতা তৈরী করাঃ

  • 10S এর 40% Jute এর 40% cotton এবং 20% Jute cell blended yarn
  • 16S এর 30% Jute এর 40% cotton এবং 30% Jute cell blended yarn

 

০৫) পাট, তুলা এবং উড সেল এর মাধ্যমে বিভিন্ন কাউন্টের সুতা তৈরী করাঃ

  • 12S এর 40% Jute এর 40% cotton এবং 20% Wood cell blended yarn
  • 16S এর 30% Jute এর 40% cotton এবং 30% Wood cell blended yarn

 

০৬) পাট, তুলা মিশ্রিত  সুতা দ্বারা বিভিন্ন ধরনের কাপড় তৈরী করা

  • পাট, তুলা মিশ্রিত সুতা দ্বারা ১৬ ধরনের স্বল্প মূল্যের শপিং বেগ তৈরী করা।
  • পাট, তুলা মিশ্রিত সুতা দ্বারা বিভিন্ন ধরনের ডকোরেটিভ পর্দার কাপড় তৈরী করা।
  • পাট, তুলা মিশ্রিত সুতা দ্বারা বিভিন্ন ধরনের প্রিন্টেট পর্দার কাপড় তৈরী করা।
  • পাট, তুলা মিশ্রিত সুতা দ্বারা বিভিন্ন ধরনের Stripe পর্দার কাপড় তৈরী করা।
  • পাট, তুলা মিশ্রিত সুতা দ্বারা বিভিন্ন ধরনের বেড কভারের কাপড় তৈরী করা।

 

২) প্রযুক্তির/গুনাগুন/বৈশিষ্ট্যঃ

  • পাট অাঁশকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবর্তন করে তুলার বিকল্প তৈরী করে টেক্সটাইল অাঁশ হিসাবে ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে।
  •  গরম কাপড় তৈরী করার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। 
  •  পাট, তুলা এবং দেশী ভেড়ার পশম মিশিয়ে উল সুতা তৈরী করা হয়েছে, এটি তুলনা মূলকভাবে শীতের পোশাক তৈরীর উপযোগী।
  •  পাট তুলা মিশ্রিত সুতা দিয়ে তৈরীকৃত স্বল্প মূল্যের শপিং ব্যাগ, হালকা, টেকসই দেখতে সুন্দর ও পরিবেশ বান্ধব।
  •  শীত বস্ত্র হিসাবে ব্যবহার উপযোগী।
  •  মুজিব কোট তৈরীতে ব্যবহৃত হতে পারে।
  •  আমদানীকৃত তুলার উপর চাপ কমবে, ফলে অর্থনৈতিকভাবে দেশ লাভমান হবে।
  •  কটন সুতার বিকল্প হিসাবে ব্যবহার হতে পারে।
  •  বিভিন্ন ধরনের ডেকোরেটিভ পর্দার কাপড় ঘরের সুন্দর্য্য বহুলাংশে বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
  •  বিভিন্ন Design এরং Sofa cover drawing room এর সুন্দর্য্য বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

 

০৩) জেটিপিডিসি এর প্রযুক্তির সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ

  • পাট আঁশকে কেটে ছোট ছোট টুকরো করে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় উন্নীত করে তুলার সমতুল্য মান সম্পন্ন করা।
  • প্রক্রিয়াত্রিত পাটকে তুলার সংগে চাহিদা বা প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন অনুপাতে সংমিশ্রিত করা।
  • দেশী এবং তোষা পাট পৃথকভাবে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় নরম ও সাদা করে তুলার সঙ্গে সংমিশ্রণ করিয়ে টেক্সটাইল দ্রব্য উৎপাদনে উপযোগিতা পরীক্ষা করা।
  • ঐ সংমিশ্রিত আঁশ দিয়ে Cotton processing system এ চিকন সুতা (যাকে কটন কাউন্টে পরিমাপ করা হয়) তৈরি করা।
  • বিভিন্ন কাউন্টের সুতার ভৌত ধর্ম পরীক্ষা সম্পন্ন করে তা দিয়ে বিভিন্ন রকমের উন্নত ফেব্রিক্স, শপিং ব্যাগ, বক্রম সহ টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পে ব্যবহারোপযোগী দ্রব্যাদি উদ্ভাবন ও উৎপাদন করা।
  • উত্তরোত্তর গবেষণার মাধ্যমে আরও চিকন অথচ মজবুত সুতা, পাটের সংগে পশম ও অন্যান্য আঁশ সংমিশ্রন করানো।
  • উদ্ভাবিত ফেব্রিক্স এর রঞ্জন, নকশা করা এবং রঞ্জন গ্রাহীতা ও স্থায়িত্ব পরীক্ষা করা।
  • উৎপাদিত ফেব্রিক্স বহু বার ধুয়ে এর সংকোচন প্রসারণ ক্ষমতা, কোঁচকানো, আয়রনিং ইফেক্ট, আকার-আকৃতির পরিবর্তন লক্ষে করা এবং ফেব্রিক্স/সুতাকে উন্নত করার জন্য গবেষণা করা।
  • পাটকে আধুনিক টেক্সটাইল দ্রব্যাদি উৎপাদনের উপযোগী কাঁচামাল হিসাবে পরিচিত করনো।
  • কুটির শিল্পের উপকরণ হিসাবে পাট সংমিশ্রিত সুতার ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা যাচাই এবং ভোক্তাদের নিকট থেকে প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে দ্রব্যাদির মানোন্নয়ন।
  • গবেষণার এ ধারা এবং উদ্ভাবিত দ্রব্যাদি সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি, দেশীয় কুটির শিল্পকে সহায়তা এবং, গার্মেন্টস শিল্পকে সহযোগিতা প্রদান করা।

 

০৪) প্রযুক্তি হতে প্রাপ্তিঃ

জেটিপিডিসি উদ্ভাবিত সুতা দ্বারা বিভিন্ন ধরনের পর্দার কাপড়, বেড কভার, সোফার কভার, বেডসীট, তোষকের কাপড়, সাফারীর কাপড়, ডেনিম, মেয়েদের ওড়না, ১৬ ধরনের শপিং ব্যাগ, ফোন্ডিং ব্যাগ, দোপাট্টা, গ্রামীন চেক তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া আড়ং প্রবর্তনা সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান জেটিপিডিসির সুতা নিয়ে বিভিন্ন দ্রব্য তৈরি করছে। কেউ কেউ ইউরোপে শীতে ঘরে ব্যবহারোপযোগী তাপরোধী জুতার বেস, ইনার তৈরির জন্যও এ সুতা ক্রয় করছে। জেটিপিডিসি উইং এর উদ্ভাবিত প্রযুক্তি হস্তান্তর ও উদ্ভাবিত পণ্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন ও বাজারজাত করার লক্ষে আগ্রহী প্রতিষ্টানের সাথে ৪টি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। 

 

জেটিপিডিসি এর কাজ হলোঃ

  • পাট আঁশকে কেটে ছোট ছোট (-৪ সে.মি.) টুকরো করে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় উন্নীত করে তুলার সমতুল্য মান সম্পন্ন করা।
  • প্রক্রিয়াত্রিত পাটকে তুলার সংগে চাহিদা বা প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন অনুপাতে সংমিশ্রিত করা।
  • Cotton processing system এ সংমিশ্রিত অাঁশ দিয়ে চিকন সুতা (যাকে কটন কাউন্টে পরিমাপ করা হয়) তৈরি করা।
  • বিভিন্ন কাউন্টের সুতার ভৌত ধর্ম পরীক্ষা সম্পন্ন করে তা দিয়ে বিভিন্ন রকমের উন্নত ফেব্রিক্স, শপিং ব্যাগ, বক্রম সহ টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পে ব্যবহারোপযোগী দ্রব্যাদি উদ্ভাবন ও উৎপাদন করা।
  • উত্তরোত্তর গবেষণার মাধ্যমে আরও চিকন অথচ মজবুত সুতা তৈরি এবং পাটের সংগে পশম ও অন্যান্য অাঁশ সংমিশ্রন করানো।
  • উদ্ভাবিত ফেব্রিক্স এর রঞ্জন, নকশা করা এবং রঞ্জন গ্রানীতা ও স্থায়িত্ব পরীক্ষা করা।
  • উৎপাদিত ফেব্রিক্স বহু বার ধুয়ে এর সংকোচন প্রসারণ ক্ষমতা, কোঁচকানো, আয়রনিং ইফেক্ট, আকার-আকৃতির পরিবর্তন লক্ষ্য করা এবং ফেব্রিক্স/সুতাকে উন্নত করার জন্য গবেষণা করা।
  • পাটকে আধুনিক টেক্সটাইল দ্রব্যাদি উৎপাদনের উপযোগী কাঁচামাল হিসাবে পরিচিত করানো।
  • কুটির শিল্পের উপকরণ হিসাবে পাট সংমিশ্রিত সুতার ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা যাচাই এবং ভোক্তাদের নিকট থেকে প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে দ্রব্যাদির মানোন্নয়ন।
  • গবেষণার এ ধারা এবং উদ্ভাবিত দ্রব্যাদি সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি, দেশীয় কুটির শিল্পকে সহায়ত এবং গার্মেন্টস শিল্পকে সহযোগিতা প্রদান করা।